রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর |
রংপুরের বদরগজ্ঞে নিজের কন্যাকে ধর্ষনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাবা বাবলু এখতারকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিচারক রোকনুজ্জামান আজ বৃহসপতিবার দুপুরে এ রায় প্রদান করেন।
সেই সাথে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই আখতারুল ইসলামকে মামলার তদন্তে গুরুতর গাফিলতির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবার আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষনার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আসামী। পরে তাকে পুলিশী পাহারায় আদালতের হাজত খানায় নিয়ে যাওয়া যায়। পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন এ্যাডভোকেট।
মামলার বিবরনে জানা গেছে রংপুরের বদরগজ্ঞ উপজেলার ওসমানপুর খরেরডাঙ্গা গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে আসামী বাবলু এখতারের বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছিলো দিনাজপুরের এক যুবকের সাথে। বনিবনা হওয়ায় তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর মেয়েটি বাবার বাবলুর বাড়িতেই বসবাস করছিলো। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর রাতে মেয়েটি ঘরে একাকি ঘুমিয়েছিলো। রাতে তার বাবা আসামী বাবলু ঘরে ঢুকে কাপড় দিয়ে মুখ চেপে ধরে মেয়েকে ধর্ষন করে। তার আত্মচিৎকারে আশে পার্শ্বের লোকজন ও স্বজনরা এগিয়ে আসলে সে ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভিকটিম মেয়েটি নিজেই বাদী হয়ে বদরগজ্ঞ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ প্রায় তিনমাস পর ২০২০ সালের ২২ ফেরুয়ারী আসামীকে গ্রেফতার করে। তদন্ত শেষে পুলিশ আসামী বাবলুর বিরুদ্ধে ৩০/৯/২০২০ইং তারিখে আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। মামলায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরাা শেষে আসামী বাবলুকে দোষি সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন।
মামলার সরকার পক্ষের আইনজিবী ও বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন এ্যাডভোকেট জানান মামলাটি অত্যান্ত সেনসেটিভ ও দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু আলোচিত মামলায় পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে চরম গাফিলতি করেছে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন। মামলাটি প্রথমে এস আই শরিফুল ইসলাম তদন্ত করেন পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্বপান এস আই আখতারুল ইসলাম। দ্বিতীয় দফা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা আখতারুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত শেষে ধর্ষনের ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা উল্লেখ করে আদালতে চার্জসীট দাখিল করেছেন। সে কারনে বিজ্ঞ বিচারক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার কথা রায়ে উল্লেখ করেছেন বলে জানান।
এদিকে রায় ঘোষনার সময় আসামী পক্ষের আইনজিবী উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে রায় ঘোষনার সময় আসামী বাবলু মিয়াকে মাথা নীচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।