মোঃ খাইরুল ইসলাম মুন্না,
বরগুনা প্রতিনিধি:-
মহামারি করোনাভাইরাসের টিকার মজুদ শেষ হয়ে গেছে বরগুনায়। টিকা না থাকায় মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বরগুনা সদর হাসপাতাল টিকাদান কেন্দ্রে নিবন্ধিত টিকা নিতে আসা সবাইকে টিকা প্রদান করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়াও বরগুনা সদর উপজেলা টিকাদান কেন্দ্র ব্যতীত অন্য পাঁচ উপজেলার পাঁচটি টিকাদান কেন্দ্রে হাতেগোণা কিছু টিকা মজুদ রয়েছে। যা আগামীকাল বুধবার শেষ হয়ে যাবে বলে ধারণা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের।
বরগুনার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৮৬০ ডোজ টিকা সরবরাহ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে তিনবারে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ২৬০ ডোজ। আর চার বারে সিনোফার্মের টিকা সরবরাহ করা হয়েছে ৬৩ হাজার ৬০০ ডোজ।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, বরগুনায় করোনাভাইরাসের টিকাগ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ টিকাগ্রহণ করেছেন ২৩ হাজার ৬০ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২০ হাজার ৪৬০ জন। আর সিনোফার্মের প্রথম ডোজ টিকাগ্রহণ করেছেন ৫৯ হাজার ৪৮৩ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮০৬ জন।
বরগুনার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এ মুহূর্তে কোনো টিকা মজুদ নেই। আর সদর উপজেলার টিকাদান কেন্দ্রের মজুদও ফুরিয়ে গেছে। এছাড়া বাকি পাঁচ উপজেলার পাঁচটি টিকাদান কেন্দ্রে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ হাজার ৩৭০ ডোজ টিকা মজুদ আছে। যা শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদানের জন্য মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়াও এ পাঁচ টিকাদান কেন্দ্রে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১ হাজার ১০০ ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে। যা দিয়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করা হবে।
বরগুনা জেলা ইপিআই সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের টিকার মজুদ প্রায় শেষের পথে। সদর উপজেলার টিকার মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় এখানে টিকা প্রদান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বাকি পাঁচ উপজেলায় যে টিকা মজুদ রয়েছে তা আগামীকালের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে বলে আমাদের ধারণা।
বরগুনা সদর হাসপাতাল টিকাদান কেন্দ্রের নিবন্ধিত টিকা গ্রহিতা বদরুল ইসলাম বলেন, নিবন্ধনের পর আজ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের টিকা প্রদান কেন্দ্রে টিকা গ্রহণের জন্য ম্যাসেজের মাধ্যমে আমাকে অবহিত করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে আমি টিকাদান কেন্দ্রে গিয়েও টিকা গ্রহণ করতে পারিনি। এখানে টিকার মজুদ ফুরিয়ে গেছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে।
বরগুনা সদর হাসপাতাল টিকাদান কেন্দ্রে কর্মরত ইপিআই প্রকল্পের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এনামুল কবির বলেন, ৮২৮ ডোজ টিকা হাতে নিয়ে আজ আমরা টিকা প্রদান শুরু করি। কিন্তু টিকা মজুদের থেকে টিকা গ্রহিতার সংখ্যা বেশি ছিল আজ। ফলে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে টিকা শেষ হয়ে গেলে নিরুপায় হয়ে টিকা প্রদান বন্ধ করে দেই।
এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, টিকা মজুদ থাকা অবস্থায়ই আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করেছি। দুই তিনদিন আগেই বরগুনায় টিকা আসার কথা ছিল। কিন্তু তা আসেনি। তাই টিকার বরাদ্দ চেয়ে নতুন করে আবার আমরা আবেদন করেছি। দুই-একদিনের মধ্যেই আমাদের এ সংকট দূর হবে বলেও জানান তিনি।