মোঃ খাইরুল ইসলাম মুন্না,বেতাগী (বরগুনা):-
বরগুনার বেতাগীতে সালিশের মাধ্যমে এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত শেষে ইউএনও‘র মাধ্যমে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালায় একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের জোয়ার করুনা গ্রামের মৃত মেনাজ উদ্দিনের ছেলে মো: আবুল কালাম চলতি বছরের গত ১৭ জুন বিকেলে ৫ টায় ঘরে কেউ না থাকার সুবাধে তিনি কিশোরীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। কিন্ত কিশোরীর পরিবার গরীব হওয়ায় তাদের অসহায়াত্বের সুযোগ নেয় আবুল কালাম।
বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালায়ের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনায় ‘সালিশ’ বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্বেও আবুল কালাম স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মাতুব্বরদের ম্যানেজ করে তাদের দিয়ে ভুক্তভোগি পরিবারটিকে চাপ সৃষ্টি করে সালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে টাকার বিনিময় আপোষের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়। আর এ টাকায়ও সিংহভাগ ভাগ বসায় সালিশরা।
এতে ক্ষুদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দা মো: মাসুম বিল্লাহ সহ ২৩ জন ণাগরিক এই ঘৃণ্য কর্মের সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। এ প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালায় গত ২৪ আগষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্র প্রেরণ করে।
তিনি গত ১৪ অক্টোবর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। গত ১৮ অক্টোবর সরেজমিন, অভিযোগের ভিকটিম ও গ্রামবাসীদের সশরীরে ডেকে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে। তদন্ত শেষে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ২০ অক্টোবর ইউএনও‘র কাছে এর প্রতিবেদন দাখিলের পর গত ৪ নভেম্বর (স্মারক নং-৬৪০) ইউএনও‘র মাধ্যমে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে এর প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তদন্তে আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রভাবশালীদের চাপ ও আর্থিক লেনদেনের কারনে কিশোরী ও তার পরিবার এখন মুখ খুলতে পারছেনা। ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ ও আপোষ মীমাংসা করা সম্পূর্ণ অবৈধ।
অভিযোগকারী মো: মাসুম বিল্লাহসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তারা এ বিষয় জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করায় আবুল কালাম ও তার লোকজন তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ। এ জন্য তাদেরকে নানাভাবে হয়রাণি এবং উল্টোভাবে মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
তদন্তে অভিযুক্ত মো: আবুল কালাম এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব মিথ্যা। জমি-জমা বিরোধের কারনে প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সুহৃদ সালেহীন বলেন, এ ঘটনায় সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে তদন্ত করা হয়। তদন্ত শেষে তার দেওয়া প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট পাঠানো হয়েছে।