পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর বুকে আগমন ও ধরনীর মায়া ত্যাগ করে ১২ রবিউল আওয়াল আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে চলে যান এই দিনে। তাই দিনটি গোটা বিশ্বের মুসলমানদের নিকট অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
নবীজির জীবণচরিত নিয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বেনাপোল বাজারস্থ “ডাবলু মার্কেট” এর সম্মুখে এক বিশাল “সিরাতুন্নবী” মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। “ডাবলু মার্কেট” ব্যবসায়ীবৃন্দ কর্তৃক আয়োজিত ৪নং বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান ও বেনাপোল বাজার কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক-আলহাজ্ব বজলুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐ আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিশিষ্ঠ ইসলামী চিন্তাবীদ মোফাসসিরে কোরআন মোঃ মাহবুবুর রহমান(খতিব,বেনাপোল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ),দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেননা-বিশিষ্ঠ আলেমে দ্বীন মোফাসসীরে কোরআন হাফেজ মাওলানা রায়হান কবির(খতিব, বেনাপোল পুকুরপাড় জামে মসজিদ)।
এ ছাড়াও অন্যান্য ওলামায়ে কেরামগণ অনুষ্ঠানে তাশরিফ রাখেন। অনুষ্ঠানে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন মোঃ মুজাহীদ হুসাইন।
নবীজি’র জীবণচরিত নিয়ে আলোচনায় বক্তারা বলেন,
রাসূল (সাঃ) এর জীবনী ঘিরে দুটি বিষয় আমরা পালন করে থাকি, ঈদে মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী। মিলাদ ও সিরাত দুটি আরবি শব্দ। মিলাদ অর্থ জন্ম আর সিরাত শব্দের অর্থ জীবনচরিত। সুতরাং মিলাদুন্নবী (সা.) অর্থ নবীজির জন্ম আর সিরাতুন্নবী (সা.) এর অর্থ নবীজির জীবনচরিত। মূলত নবীজির শুভ বেলাদাত বা জন্মকে স্মরণ করে যে অনুষ্ঠান হয় তাকে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল বলা হয়। আর নবীজির জীবনচরিত আলোচনার জন্য যে অনুষ্ঠান তাকে সিরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল বলা হয়।
প্রদত্ত আলোচনায় আমরা সিরাতুন্নবীর গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করবো। সিরাতুন্নবী (সা.) শিরোনামে যে মাহফিল হয় সেখানে রাসূলে পাক (সা.) এর জন্মবৃত্তান্তকে বাদ দিয়ে জীবনচরিত আলোচিত হয় না বরং জন্ম থেকে শুরু করে পুরো জীবনীই আলোচনা করা হয়। যার গুরুত্ব ও শিক্ষা প্রতি মুসলামানের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
রাসূল (সাঃ) এমন একজন আদর্শিক মানুষ ছিলেন, যিনি শুধু মুসলমানদের নিকটই নয়, একজন বিশ্বস্ত মানুষ হিসেবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বিরাও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতো। কাফির, মুশরিক এমনকি জানের দুশমনরাও যার সত্যবাদির জন্য তাকে ‘আল আমিন’(বিশ্বস্ত) বলে ডাকতো।
পৃথিবীর এই মহামানবের আগমনে কিসরা ও কাইজার গণচুম্বি প্রাসাদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অন্ধকার দূর হয়ে আলোর পথে আসে তৎকালীন জাহেলি সমাজ। পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত তাকে বিশ্ববিবেক কখনো ভুলে যাবে না।
১২ রবিউল আউয়াল রাসূল (সাঃ) পৃথিবীতে আসেন ও একই দিনে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন। তিনি আজ পৃথিবীতে নেই, সেটিই ভাববার বিষয়। তবে তাঁর আগমন ও প্রস্থান নিয়ে শোক পালন বড় কথা নয়, তার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে তাঁকে অনুসরণ করাই একজন প্রকৃত মুসলামানের কাজ।
কোরআন ও সুন্নাহকে আকড়ে ধরে ইসলামকেই ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির পথ হিসেবে মানতে হবে। ঠিক যেভাবে তিনি করেছেন।
আজ আমাদের মাঝে তিনি নেই। তাতে কি হয়েছে? নবীর সিরাত (৬৩ বছরের জীবনী) তো আমাদের অন্তরে আছে।