রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুরের বিজ্ঞ আমলী আদালতে দায়ের করা সি আর ৭৮১/২০ মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা নিয়ে রংপুর পুলিশের একটি ইউনিট নগরীর ঠিকাদার পাড়ায় অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মায়ের দোয়া আয়রন স্টোর থেকে দুইজনকে হেফাজতে নেয়। বিনা মেঘে বজ্রপাতের ঘনঘটা তৈরী হয় তাৎক্ষণিক মুহূর্ত,কবে মামলা হলো কে মামলা করলো, কি মামলা, ঘটনাস্থলে জানতে পারেন গ্রেফতারকৃতরা। গত ১৫ নভেম্বর বিকেল ৫ টায় আইন সহায়তা কেন্দ্রের রংপুর বিভাগীয় সভাপতি মোঃ এজাজ আহম্মেদ ও তার বাবা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মোঃ হাসান আলী এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছেন।মামলার নথিতে অসঙ্গতি দেখে আদ্যপান্ত খোজার চেষ্ঠায় টানা কয়েক দিন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য রেকর্ড করি আমরা।যেহেতু তথ্য না দেওয়ার সংস্কৃতি ব্যাক্তি সহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের অনীহা ওপেন সিক্রেট। ঘটনার তারিখ ১৭/১১/২০২০, আদালতে ডায়েরী হয় ১৫/১২/২০২০, তদন্তকারী কর্মকর্তার ব্যাখ্যামূলক সূচীপত্রের বর্ণনা ৩/১২/২০২০ ঘটনার ১২ দিন আগে প্রস্তুত করা দেখে অন্তত ৫ জন আইনজীবী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মামলার ২য় স্বাক্ষী মোঃ জীবন শেখ বাজারে থাকায় রাত ৯.৪৫ ঘটিকায় বাড়িতে এসে জানতে পারে,ঘটনাটি সে নিজে দেখে নাই অথচ তার আক্রান্ত হওয়ার ছবি নথিতে সংযুক্ত করে আদালতকে প্রভাবিত করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বর্ননা অনুযায়ী,ট্রাক রাস্তা বন্ধ করে থাকতে দেখে স্থানীয় এনামুল এর সঙ্গে মারামারি হয়।যদিও ট্রাকের ছবি সংযুক্তিতে কোন তারিখ সময় দেখা যায় নি।এই সবকিছুর মন্ত্রদানকারী মোঃ নূর আলম,সেও একটি মামলার বাদী এমন কথা নির্দিধায় স্বীকার করেছেন তাদের মুহরী রতন মিয়া।বলা বাহুল্য তারা ইতোমধ্যে হয়রানিমূলক অন্তত ৩ টা মামলা সাজিয়ে ভূক্তভূগী পরিবারবারটিকে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে জর্জরিত ও অনেক কষ্টের মধ্যে ফেলেছেন বলে দাবী করেন ব্যাবসায়ী হাসান আলী। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে এজাজ আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ২০০৮ সালের আল্টাস্নোগ্রাফি রিপোর্ট সংযুক্ত করে ২০২০ সালে মামলা দায়েরের বিষয়টা আমাদের খুবই মর্মাহত করেছে। উল্লেখ্য,পূর্বের মামলার বাদী সুজনের বাবা ফরিদ শেখ ২য় মামলার বাদী আতিকা বেগম সুজনের স্ত্রী ২০০৮ সালের প্রেগন্সির আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট দিয়ে ২০২০ সালে নারী নির্যাতন তুলে ধরে মারামারির মামলা করেন তিনি।পুনরায় ডঃ মিরাতুল জেসমিনকে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করে সন্তান প্রসবের ৪৪ দিন পর অ্যানেসথেসিয়ালজিস্ট অবঃ ডাঃ আওরঙ্গজেব সেলিম ন্যাশনাল কমিউনিটি হাসপাতাল থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট দেন যা মামলার নথিতে স্পস্ঠ। সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ডাঃ আওরঙ্গজেব বলেন,আতিকার কোন জখম কিংবা কোন ইনফেকশন নিয়ে সিজার করা হয় নি স্বাভাবিক ভাবেই সন্তান প্রসব করা হয়েছে।আমি কোন প্রকার মেডিকেল সার্টিফিকেট দেই নি এবং সেটা আমি দিতেও পারি না।তারা কোথায় পেল কিভাবে পেল তাও আমার জানা নেই। ডাঃ মিরাতুল জেসমিনের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন,আমি সাধারণ প্রক্রিয়ায় সিজার করেছি কোন মারামারি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিল করি নি।কেন আমার নাম সার্টিফিকেটে রেফারেন্স করবে বা কিসের জন্য রেফারেন্স করেছে সেই বিষয় আমি অবগত নই এবং কেউ আমাকে এই বিষয়ে অবগত করেন নি। একই ঘটনাকে দেখিয়ে পৃথক মামলা করা,আদালতে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে মামলায় পরোয়ানার মাধ্যমে গ্রেফতার দেখানো নিরপরাধ ব্যক্তির সম্মানে আঘাত এবং তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করেন আইন সহায়তা কেন্দ্র আসক ফাউন্ডেশনের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক খন্দকার সাইফুল ইসলাম সজল। ভুল করে অথবা আর্থিক লোভে,এমন ঘটনা যেহেতু হরহামেশাই হয়ে থাকে,তার মানে ধরা যেতে পারে এটি সমাজের একটি ব্যাধি৷যেই ব্যাধিতে আক্রান্ত আমাদেরই চারপাশের অসংখ্য মানুষ৷কারো গায়ে ইউনিফর্ম আছে,কারো নেই৷