স্টাফ রিপোর্টার :-
ভোলা শহরের পৌর জাঠালী এলাকায় একটি মূল্যবান জমি দখলে নিতে একটি পক্ষ স্বশস্ত্র মহড়া চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিনের বিরোধীয় ওই সম্পত্তি ভোলার ঐতিহ্যবাহী মন্তাজউদ্দিন মিয়া পরিবারের বলে তারা কয়েক যুগাধিকাল ধরে ভোগদখলে আছেন বলে জানান। ওই এস্টেটের মোতাওয়াল্লি জামালউদ্দিন মিয়া জানান,আলীনগরের ১নং ওয়ার্ডস্থ দফাদার বাড়ীর বাসিন্দা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কামাল হোসেন গংরা মিয়া এস্টেট হতে মামকবাজী করে দুই একর ৯৯শতাংশ জমি দখলে নিয়ে সেখানে বসবাস করছিলেন। ওই সম্পত্তি থেকে মন্তাজউদ্দিন এস্টেট স্থানীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম আব্দুল ওয়াজেদ মুন্সী’র কাছে পঁচিশ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। পরবর্তীতে আব্দুল ওয়াজেদ আরো ৩৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু উক্ত সম্পত্তির পুরোটাই নিজেদের দাবী করে কামাল গংদের নিকটাত্নীয় ছিদ্দিক হাওলাদার বাদী হয়ে ১৯৬২ ইং সালে ওয়াজেদ মূন্সী গংদের বিবাদী করে ভোলার তৎকালীন মুন্সেব আদালতে একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করেন। যার নং-৩২৪ ভো।
মামলা সূত্রে জানা যায়,কাঠালী মৌজার সিএস ১৫৫(১) ও ১৫৫(২) নং খতিয়ানভূক্ত ১০ একর ১৯ শতাংশ জমির মালিক মোঃ ছবের আলী মিয়া। তার সেই জমি হতেই ছিদ্দিক হাওলাদার গং ২ একর ৯৯ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করেন। বিক্রিত এ সম্পত্তি থেকেই ওয়াজেদ মুন্সী আরো ৩৭ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে মালিক হন। মূলতঃ এ ৩৭ শতাংশ জমি নিয়েই ছিদ্দিক গংরা ওয়াজেদ মুন্সীকে বিবাদী করে মোকদ্দমা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত ছিদ্দিক হাওলাদার গংরা মিয়া এস্টেট হতে ২ একর ৯৯শতাংশ জমি প্রাপ্য বলে ডিক্রি প্রদান করেন। ওয়াজেদ মুন্সীর লোকান্তরে তার ছেলে নুরুল ইসলাম আাদালতের সেই রায়েয়র বিরুদ্ধে আপীল করলে সেটি খারিজ করে দেন আদালত। পরবর্তীতে সেই খারিজাদেশের বিরুদ্ধেও আপীল করেন তিনি। যা অদ্যবদি চলমান রয়েছ।
এদিকে চলমান মেকদ্দমাকে পূঁজি করে ছিদ্দিক হাওলাদার’র জ্ঞাতিগোষ্ঠী’র অন্যতম শরীক সাবেক পৌর কমিশনার কামাল হোসেন’র নেতৃত্বে তার ভাই হাসিবসহ ১০/১৫ জনের সন্ত্রাসীচক্র গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টায় মিয়া এস্টেটের ৭ একর ২০ শতাংশ জমি দখলের চেস্টা চালিয়েছে। ক্যাডাররা ওই জমিতে বিদ্যমান গাছ-গাছালী লুটের চেষ্টা চালালে স্থানীয় বাসিন্দা ও জমির প্রকৃত মালিকগনের প্রতিরোধের মূখে সন্ত্রাসীরা পিছু হটতে বাধ্য হন। এর পূর্বে গত ১৭ সেপ্টেম্বর একই ক্যাডাররা মিয়া এস্টেটের সেই জমিতে হানা দিয়ে সেখানকার বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় শতাধিক কলাগাছ কেটে বিনাশ করে ফেলে। সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে গেলে স্থানীয়রা জানান,সাবেক কমিশনার কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ওই এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠে। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- মানছুর আলম,হাসিব,বারী,সিপন ও মিলন মাস্টার। এরা এলাকায় সন্ত্রাস,চাঁদাবাজী,ভূমিদস্যুবত্তি ও নিরীহ মানুষের উপর নির্যাতন-নিপীড়নের স্টীমরেলার চালাচ্ছে বলে অভিযোগের অন্তঃ নেই। তারই ধারাবাহিকতায় গত জয়েকদিন যাবত এসকল দূর্বৃত্তরা মন্তাজউদ্দিন মিয়া এস্টেটের ভেগদখলীয় জমি দখলের চেস্টায় অস্ত্রের মহড়া চালাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক কাউন্সিল কামাল হেসেনের সাথে যেগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলছে। আদালত থেকে আমরা একটি রায় পেয়েছি। অবশিষ্ট জমিগুলোও তাদের নিজস্ব মালিকানার বলে দাবী করেন কামাল হোসেন মিয়া। তবে ডিক্রিমূলে প্রাপ্ত ২ একর ৯৯ শতাংশ জমি ব্যাতীত তিনি অবশিষ্ট ৭ একর ১৯ শতাংশ জমির মালিকানার স্বপক্ষে কোনপ্রকার দলিল-দস্তাবেজে দেখাতে পারেননি। সন্ত্রাসী বাহিনী গড়েছেন এমন অভিনয় অস্বীকার করেন তিনি।
ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েত হোসেন’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,আমি এই সংক্রান্ত কো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
এদিকে বিবদমান সম্পত্তি নিয়ে ভোলার পৌর এলাকার কাঠালী নামক এলাকায় দুই পরিবারের দূ’গ্রুপ এখন মূখোমূখী অবস্থান করছে। ফলে যেকোন মূহুর্তে সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।