মোঃ ছাইফুল ইসলাম (জিহাদ),
নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি :-
বঙ্গোপসাগরের কোলে মেঘনার শাখা নদী, অসংখ্য শ্বাসমূলে ভরা কেওড়া বন ও বালুচরবেষ্টিত সমুদ্র সৈকতের নিশ্চুপ ছোট্ট সবুজ ভূখণ্ড নিঝুম দ্বীপ। এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা ছোট্ট একটি ভূ-খণ্ড। ‘দ্বীপ’ বলা হলেও এটি মূলত একটি বালুর ‘চর’। এক সময় এটিকে চর ওসমান বা বাউল্লার চরও বলা হতো।
জানা যায়, বেশ কয়েকটি ছোট চরের সমন্বয়ে ১৯৫০ সালের শুরুর দিকে এ দ্বীপাঞ্চলটি জেগে ওঠে, যার আয়তন প্রায় ১৪,০৫০ একর। ১৯৫০ সালের শুরুর দিকে নোয়াখালী জেলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের অগভীর এলাকায় উত্তর দীপপুঞ্জে একটি ক্লাস্টার আবির্ভূত হয়।
এই নতুন স্যান্ডব্যাংকগুলোকে প্রথমে জেলেদের একটি গোষ্ঠী আবিষ্কার করে। পরে ১৯৭৯ সালে হাতিয়ার সাবেক মন্ত্রী মরহুম আমিরুল ইসলাম কালাম সাহেব এটিকে নিঝুম দ্বীপ নামে নামকরণ করেছিলো। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের আগ পর্যন্ত এখানে কোনো লোকবসতি ছিলো না,তাই দ্বীপটি নিঝুমই ছিলো। পরবর্তীতে সত্তরের দশকে বন বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়।
এখানে হাজার পাখির কিচিরমিচির কলতান নিস্তব্দতার ঘুম ভাঙ্গায়, চিকচিক করে বালি, মরিচিকা হাতছানি দেয় বালুচরে তার মাঝে দাঁড়ানো সারি সারি খেঁজুর গাছ, মায়াবী হরিণের পালের পদচারনায় মুখরিত হয় ইন্দ্রিয়, মাইলের পর মাইল সারি সারি কেওড়া গাছের বুক চিরে বয়ে চলে ছোট নদী, সমুদ্রের বুকে হেলে পড়ে অস্তগামী রক্তিম সূর্য, সমুদ্রকোল হতে সরু খাল সবুজের বুক চিরে চলে গেছে গহীন বনে।
এ যেন সবুজের গালিচা বিছিয়ে দেয়া হয়েছে সমুদ্রের তলানী পর্যন্ত। এ এমনই এক মোহনীয় প্রকৃতি যা শহুরে কর্মচঞ্চল মানুষকে নতুন প্রাণ দেয়। নিঝুম দ্বীপ- সত্যিই নিঝুম, নিশ্চুপ। একবারেই আলাদা। সব যান্ত্রিকতার বাইরে স্নিগ্ধ মোহনীয়। এখানে নেই জনস্রোত, রং বেরং বাতির ঝলকানি বা পোড়া তেলের গন্ধ। এ যেন পৃথিবীর মুগ্ধ রূপ।
এই নিঝুমদ্বীপে বর্তমান রাজত্বে চেয়ারম্যান আছেন মোঃ মেহরাজ উদ্দিন। দেখা হলো আর কথা হলো এই চেয়ারম্যান চেয়ারম্যানের সঙ্গে। শোনা গেল নিঝুমদ্বীপ নিয়ে অনেক আজব রুপকথার গল্প।
চেয়ারম্যান নিজেই দেখালেন অনেক অপরিচিত নতুন রাস্তা-ঘাটসহ বৈচিত্র্যময় অনেক দর্শনীয় স্থান।
যা ভ্রমণকারিরা সহজে দেখতে পায় না। বন্দের টিলা বাজার থেকে পশ্চিম দিকের অবস্থান অনেক গণবসতি। যেখানে ঢুকলে দেখা যায় এলোমেলো দেখার মতো অনেক সড়ক পথ গুলো।
তিনি বলেন আগামীতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই আর না হই তবে নিঝুমদ্বীপের অসমাপ্ত কাজ গুলো নিজ উদ্যোগে শেষ করবো।
রাজনৈতিক মতানৈক্যে নিয়ে কিছুই বলতে রাজি নয় তিনি। শুধু বলেন আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শে রাজনীতি করি এবং করবো। তবে তিনি নিঝুমদ্বীপের মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যেয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, যদি বিদ্যুৎ আসে তাহলে নিঝুমদ্বীপ হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে আধুনিক সর্ববৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে নিঝুমদ্বীপকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা করেছিলেন। তার স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে।