হিলি প্রতিনিধি |
দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে গভীর নলকূপের তিনটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা। শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের কোকতাড়া গ্রামে কোকতাড়া কৃষক সমবায় সমিতির গভীর নলকূপের তিনটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন হাকিমপুর হিলি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর হিলি জোনাল অফিসের এজিএম বিশ্বজিৎ সরকার।
আদালতে মামলা থাকায় ট্রান্সফরমারগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিলো না। তবে ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে বোরো মৌসুমে জমিতে সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন সমিতির সদস্যরা। ফলে সেচ কার্যক্রমে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি। এ ঘটনায় আবদুল কাদের নামের একজন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন।এদিকে কোকতাড়া কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি জানান সমিতির পক্ষ থেকেও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরর প্রস্ততি চলছে।
শুক্রবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোকতাড়া সমবায় সমিতির গভীর নলকূপটি ১৯৮২ সালে গনগ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত। যাহার নিবন্ধন নং-২৫৩৫। সমবায় সমিতির এডহোক কমিটির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, গভীর নলকূপটি প্রথম থেকে সমিতি পরিচালনা করে আসছে।সেখান থেকে সাধারণ কৃষকেরা জমিতে অল্প খরচে সেচ দিতেন। হঠাৎ ২০১৮ সালে এসে একই গ্রামের আবদুল কাদের দাবি করে গভীর নলকূপটি আমি সমিতির পরিচালনা কমিটির নিকট থেকে ক্রয় করে নিয়েছি। সমিতির লোক এ কথা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে আবদুল কাদের বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে সমিতির লোকজনও তার নামে আদালতে মামলা দায়ের করে। তখন থেকে আমরা সমিতির লোকজন ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে গভীর নলকূপটি পরিচালনা করে আসছি।
কোকতাড়া গ্রামের কৃষক তয়েজ উদ্দিন, মিছির আলী বলেন, আগে আমরা সমিতির ডিপ দিয়ে অল্প টাকায় জমিতে পানি সেচ দিতাম। গত ৪-৫ বছর থেকে আদালতে মামলা চলার কারণে এখন ডিজেল ইঞ্জিন চালিত মেশিন দিয়ে গভীর নলকূপটি চলে। এতে আমাদের এখন বাড়তি খরচ পোহাতে হচ্ছে। তবে যেহেতু ট্রান্সফরমার গুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিলো না এবং মেশিন দিয়ে গভীর নলকূপটি চলে তাই চলতি বোরো মৌসুমে জমিতে পানি সেচ দিতে সমস্যা হবে না বলে জানান তারা।
হিলি পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর হিলি জোনাল অফিসের এজিএম বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, গভীর নলকূপের ট্রান্সফরমার চুরি হওয়া বিষয়টি আমি সমবায় সমিতির লোক মারুফৎ জানতে পেরেছি। ট্রান্সফরমারগুলো অফিসিয়াল ভাবে আবদুল কাদের এর নামে ছিলো। আদালতে কোকতাড়া কৃষক সমবায় সমিতি বনাম আবদুল কাদের এর মামলা চলমান থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারি নাই এবং ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে আসতেও পারি নাই। তবে আজ আমাদের সমিতির দুই জন লোক গিয়ে চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার এর বৈদ্যুতিক মিটারটি খুলে নিয়ে আসে। সমিতির লোকজনকে থানায় অভিযোগ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। ট্রান্সফরমার চুরি ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগ দিশেহারা। আর ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধে সচেতনার জন্য এলাকায় মাইকিং ও কৃষকের মোবাইলে সর্তকতামূলক ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সায়েম মিয়া জানান, ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় কোকতাড়া গ্রামের আবদুল কাদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।অভিযোগের ভিত্তিতে এস আই শামীম ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার অবশিষ্ট যন্ত্রাংশগুলো থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। তিনি আরও বলেন, সমিতির লোকজন মোবাইল ফোনে চুরি যাওয়া বিষয়টি অবগত করেছেন এবং তারাও লিখিত অভিযোগ দায়ের এর কথা বলেছেন।